নৃশংস নৃপতি দ্বিতীয় লিওপল্ড এবং কঙ্গো

Emadul Mubin
By -
0

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে, বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় লিওপল্ড বর্তমান কঙ্গোকে অনেকটা তার ব্যক্তিগত উপনিবেশ হিসাবে শাসন করেছেন। তার শাসন-শোষনের জাতা কলে পিষ্ট হয়ে কঙ্গোর জনগণ চরম ভোগান্তির শিকার হয়। রাজা লিওপোল্ডের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল কঙ্গো থেকে যে কোন উপায়ে সর্বোচ্চ পরিমাণে যতটা সম্ভব সম্পদ আহরণ করা, বিশেষ করে রাবার উৎপাদনের মাধ্যমে।

কঙ্গোর উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে এবং মুনাফা বাড়ানোর জন্য, রাজা লিওপোল্ড কঙ্গোর জনগণের উপর সন্ত্রাসের রাজত্ব আরোপ করেছিল। উল্লেখিত এই ছবিটি নৃশংসতার একটি ভয়াবহ দিক তুলে ধরে। বেলজিয়াম প্রশাসনের দ্বারা নির্ধারিত রাবার উৎপাদন কোটা পূরণ করতে ব্যর্থ কঙ্গোর কৃষক শ্রমিকদের বর্বর শাস্তির সম্মুখীন করা হতো।

হাজারে হাজারে কঙ্গোবাসীকে জনসমক্ষে ফাঁসি দেওয়া হয়, তাদের হাত কেটে ফেলা হয়। এই নিষ্ঠুরতার উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় জনগণের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা এবং বিদ্রোহের আগুন নিভিয়ে দেওয়া। এই সময়কালে সংঘটিত নৃশংসতাগুলি ভালভাবেই নথিভুক্ত করা হয়েছে যেগুলো ঔপনিবেশিক যুগের অন্ধকারতম অধ্যায়ের বাহক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

ছবিতে বেলজিয়ামের নৃশংসতার শিকার হয়ে হাত হারানো এক কিশোরকে দেখা যাচ্ছে, তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি একজন খ্রিষ্টান মিশনারি। খ্রিষ্টান মিশনারিরা তৎকালে কঙ্গোতে বেশ জটিল ভূমিকা পালন করে। একদিকে তাদের মধ্যে একদল বেলজিয়ামের রাজশক্তি অত্যাচার, অনাচার, নৃশংসতা, বর্বরতাকে বিভিন্ন ভাবে সমর্থন করেছিল। এমনকি তারা নিজেরাও এতে জড়িত ছিল। অন্যদিকে তাদেরই একদল ঐ সব অত্যাচারিত জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে যাইহোক উপনিবেশবাদ কঙ্গোর ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় যা সেই দেশটির জনগণকে অনন্তকাল তাড়া করে বেড়াবে।

Tags:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)